আফিফা মোহসিনা অরণিঃ সেন্টার ফর ল্যাংগুয়েজ স্টাডিজ (সিএলএস) এর ব্যানারে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর দশ জন শিক্ষার্থি ঘুরে এল চিয়াং মাই ইউনিভার্সিটি, থাইল্যান্ড থেকে।ইউল্যাব দল থাইল্যান্ড এ পাড়ি জমায় গত ১১-০১-২০১৭ তারিখে এবং বিশাল অভিজ্ঞতার ভান্ডার নিয়ে দেশে ফিরে আসে ২৩-০১-২০১৭ তারিখে।তের দিনের এই পুরো অনুষ্ঠানের নেতৃত্তে ছিলেন ইউল্যাবের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও সিএলএস এর ডিরেক্টর এটিএম সাজেদুল হক এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর শাহিন-আরা। থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে পারষ্পরিক সংস্কৃতি বিনিময় ছিল এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।
প্রতিদিন রোমাঞ্চকর সব অভিজ্ঞতায় ভরা থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় সকল স্থান ভ্রমণের পাশাপাশি ইউল্যাব শিক্ষার্থিদের প্রশিক্ষন দেয়া হয় থাই ভাষা, থাই রান্না, ঐতিহ্যবাহী থাই নৃত্য, মুয়ায় থাই কিকবক্সিং,ইংলিশ ওরাল প্রেসেন্টশন এবং মাহুত চালনার উপর। চিয়াং মাই শহরের প্রধান প্রধান বৌদ্ধ মন্দির এবং যাদুঘর ভ্রমণের মধ্য দিয়ে থাই কালচার এর সাথে পরিচিত হতে শুরু করে ইউল্যাব দল।এছাড়া ওখানকার পাহাড়ি আদিবাসী মানুষদের জীবন যাপনের সাথেও পরিচিত করানো হয় ইউল্যাব দল কে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬০০ মিটার উচুতে অবস্থিত চিয়াং মাই এর সর্বচ্চো বৌদ্ধ মন্দির এবং থাইল্যান্ডের রাজা-রানীর রয়্যাল প্যালেসে ভ্রমণের সুযোগ পায় তারা।
ইউল্যাব শিক্ষার্থিদের নিয়ে যাওয়া হয় চিয়াং মাই এর অন্যতম আকর্ষন তিনশত বছরের পুরনো “চিয়াং দাও কেইভ”, যেখানে ছোট বড় প্রায় একশটি গুহা মিলিত হয়েছে। কিভাবে এই গুহা আবিষ্কৃত হয়েছে, গুহার ভিতরে রূপান্তরিত পাথর কিভাবে বিভিন্ন প্রানীর আকার ধারণ করেছে, এবং গুহার ভিতরের বৌদ্ধ মুর্তির উপাসনা সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় তাদের। এ সময়ে তারা মশাল হাতে পাঁচটি গুহা ঘুরে দেখার সুযোগ পায়।
ইউল্যাব শিক্ষার্থিদের আত্মরক্ষার জন্য প্রাথমিক কিকবক্সিং প্রশিক্ষন দেয়া হয়। সেখানে তারা থাইল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী কিকবক্সিং “মুয়ায় থাই” এর সঙ্গে পরিচিত হয়।
দশম দিনে ইউল্যাব দল পরিচিত হয় “এলিফ্যান্ট মাহুত ট্রেনিং” এর সাথে। একটি গোটা দিন তারা কাটায় এলিফ্যান্ট ক্যাম্প এ এবং সেখানে তারা একসাথে পাঁচটি হাতিকে খাওয়ানো, গোসল করানো এবং হাতির পিঠে চরে পাহাড়ি বন এ ঘুরে বেড়ানোর মত রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অর্জন করে।
অনুষ্ঠানের শেষ দিন ইউল্যাব দল ভ্রমণ করে থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ চুড়া “দোই ইন্থানন ন্যাশনাল পার্ক” যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৬৩৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।এছাড়াও থাইল্যান্ড এর অন্যতম বিখ্যাত ঝর্না দেখার সুযোগ পায় তারা।সবশেষে সফল একটি ভ্রমণের স্বীকৃতি স্বরূপ ইউল্যাব এর প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয়া হয় সনদপত্র।
ইউল্যাব শিক্ষার্থীদের মতে, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশ এই দুই দেশের সংস্কৃতিতে যেমনি রয়েছে পার্থক্য তেমনি রয়েছে অনেক মিল।একেক দিনের অভিজ্ঞতা তাদের নতুন ভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। অন্য দেশের সংস্কৃতি জানতে গিয়ে তারা নিজের দেশের সংস্কৃতিকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছে।তারা চায় তাদের মত অন্যান্য দেশের তরুণেরাও বাংলাদেশে এসে এদেশের সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হোক।কারণ বাংলাদেশ ও কোন অংশে পিছিয়ে নেই।